বংশাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

২১২, বংশাল রোড, ঢাকা-১১০০

প্রত্যেক জাতির জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা একটি চলমান প্রক্রিয়া |শিক্ষার মান উন্নয়ন আধুনিকায়নের মাধ্যমে একটি জাতিকে করা যায় সমৃদ্ধশীল | বর্তমানে পরিবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে সমৃদ্ধ জাতি গড়ার  প্রত্যয়ে বংশাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পুরাতন ঢাকার মধ্যে অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে |স্কুলটির অবস্থান রাজধানী ঢাকার  কেন্দ্রস্থল বংশাল থানার অন্তর্গত ঐতিহ্যবাহী  বংশাল বড় মসজিদের বিপরীতে | বংশাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাফল্যের কথা সবারই জানা | এই বিদ্যালয়টি পরিপূর্ণ করে গড়ে তোলার  সফলতার ইতিহাস একদিনে হয় নাই |এই বিদ্যালয়টি গড়ে তোলার পিছনে রয়েছে এলাকারা গণ্যমান ব্যক্তিবর্গের অদম্য ইচ্ছা শক্তি নিঃস্বার্থ প্রয়াস শিক্ষার্থীদের যথাযথ মেধা |একটু পিছন ফিরে তাকালেই জানতে পারা যাবে এই স্কুলের যাত্রা কোথা থেকে শুরু |১৯৮৩ সালে অত্র এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তি জনাব ডাক্তার ওবায়দুর রহমান উচ্চ বালিকা  বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন |আর তার এই অনুভূতির জায়গা থেকেই তার উদ্যোগেই এলাকার বিদ্যোৎসাহী গণমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় গড়ে তোলা হয় বংশাল জুনিয়র গার্লস স্কুল |মূলত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পঞ্চম শ্রেণীর পাঠ সমাপ্ত করে অনেক মেয়ে শিশু উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার সুযোগ পায় না| এলাকার মেয়েরা যাতে একই অবস্থানে থেকে উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায় সেই লক্ষ্য থেকেই ষষ্ঠ শ্রেণীর শুরু হয় পরবর্তীতে ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে যেতে উচ্চ বিদ্যালয়ের অনুমোদন পায় ১৯৮৯  সালে |সেই সময় প্রথম প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন মিনু রহমান | একটি বিশুদ্ধ নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য একজন প্রধান শিক্ষিকার প্রয়োজনে  ১৯৯১ সালে বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রাপ্ত হন জনাব জিন্নাত-উস- সালেহা আর উনার সময়েই ১৯৯২ সালে বিদ্যালয় থেকে প্রথম এস.এস.সি বোর্ড  পরীক্ষা দেয়া হয় এবং ১৯৯৩ সালে এই স্কুলটি এম. পি. ভুক্ত  হয় |

 

মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যালয়ের ভবনটি  সম্প্রসারণ করার প্রয়োজন দেখা দেয় |১৯৯৮ সালে উনার সহযোগিতায় এবং  তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির তত্ত্বাবধানে  সম্মুখভাগ নির্মাণের মাধ্যমে বিদ্যালয়টি পায় একটি নতুন রূপ |জিন্নাত-উস-সালেহা সুদীর্ঘ প্রায় ২২ বছর তিনি প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন |২০১৩ সালে তিনি অবসরে গেলে সহ প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন |২০১৬ সালে নতুন প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে নিয়োগ পান সেতারা বেগম |তিনি  অদ্যবধি কর্মরত আছেন |১৯৮৩ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত এই দীর্ঘ পথ চলায় পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়ের সক্রিয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বৃন্দ এবং বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিত্ব হিসেবে যাদের সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি গর্বের সাথে নারী শিক্ষার একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান হিসেবে চলমান আছে তাদের নাম উল্লেখ না করলেই নয় |

 

জনাব মোঃ হোসেন, জনাব মোঃ সিরাজ উদ্দিন,জনাব মোঃ আমির উল্লাহ,জনাব মোঃ হক ,জনাব হাজী মোহাম্মদ মোন্নাফজনাব মোঃ সোলায়মান ,জনাব মোহাম্মদ ইলিয়াস, জনাব মোঃ দেলোয়ার হোসেন , জনাব ডাক্তার হাফিজুর রহমান ,জনাব ডাক্তার সাখাওয়াত  হোসেন আনু ,জনাব সালাউদ্দিন ,জনাব জামাল সহ  আরো অনেকে |দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব জনাব হাজী মোহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ | যার অবদান অস্বীকার করবার নয় |এছাড়া বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার ওবায়দুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা ডাঃ ফরিদা বেগম  শিক্ষানুরাগী সদস্য হিসেবে ছিলেন |তিনি তার পিতার স্মরণে ডাক্তার "ওবায়দুর রহমান বৃত্তি "পরিচালনা করে আসছেন |মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তায় বংশাল বড় মসজিদের পঞ্চায়েত কমিটির মোতওয়াল্লী  জনাব হাজী মোহাম্মদ আওলাদ হোসেনের সক্রিয় সহযোগিতার কথা না বললেই নয়

 

পরবর্তীতে সরকারি নির্দেশনায় রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর সভাপতি হিসেবে কার্য পরিচালনা করেছেন |বিগত মে’২০২৫ থেকে এডহক কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব আনোয়ারুল ইসলাম। নারী শিক্ষা সম্প্রসারণের  উদ্দেশ্যে বংশাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রভাতী দিবা  দুটি শিফট নিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে |এই প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার পাশাপাশি ছাত্রীদের  সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে |আর তার ফলস্বরূপ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সহ ,বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান মেলা, বার্ষিক দেয়ালিকা /দেয়াল পত্রিকা ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয় |তাছাড়া ছাত্রীদের প্রয়োজনে রয়েছে লাইব্রেরি ,বিজ্ঞানাগার ,নামাজের ঘর,ব্যবহারিক ঘর , কম্পিউটার ল্যাব |একঝাক উচ্চ শিক্ষিত, কর্মদক্ষ শিক্ষকের দ্বারা পরিচালিত বিদ্যালয়টি সগৌরবে এগিয়ে চলছে।

/ প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস